সাজেক ভ্যালি কোথায় ও সাজেক যাইতে কত টাকা লাগে এবং কীভাবে যাবেন তার উপায়

কক্সবাজার টুঁর দিতে চাইলে অবশ্যই যেগুলো জানতে হবেসাজেক ভ্যালির নাম জানে না এমন মানুষ খুব কম পাওয়া যাবে। আর ব্যাপারটা শুধু নাম জানা নিয়ে নয় মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে বড়লোকরা সবাই সাজেক ভ্যালি ঘুরতে যাওয়ার কথা ভেবে থাকে এমনকি অনেকে ঘুরতেও যায় আর যাবে না বাই কেন সাজেক ভ্যালি হল প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে অবস্থিত অপূর্ব এক সুন্দর দৃশ্যে ভরা জায়গা । এই জায়গাটি পাহাড়, ঘন বন এবং তৃণভূমিতে ভরপুর সুন্দর পরিবেশ দ্বারা পরিপূর্ণ। এগুলোর মাছ দিয়ে বয়ে গেছে অসংখ্য ছোট ছোট নদী এই নদী গুলোর মধ্যে দুটো নদীর নাম আমি আপনাদের বলে দিচ্ছি সেটা হচ্ছে কাচালং এবং মাচালং। আপনাদের উত্তেজনা বাড়ানোর জন্য আরেকটা কথা বলে দিই সেটা হচ্ছে সাজেক ভ্যালি যেতে হলে নদী পার হয়ে যেতে হয়। আর এছাড়াও রয়েছে আরো অসংখ্য টান টান উত্তেজনা। তো এত উত্তেজনা পূর্ণ জায়গা থেকে কি কি রয়েছে আর আমরা সেখানে কিভাবে যাব সেটা নিয়েই আজকে আমার এই আলোচনা।


সাজেক ভ্যালি যাওয়ার যে পথগুলো রয়েছে সেগুলো বেশিরভাগই আঁকাবাঁকা ও সুন্দর এছাড়াও সাজাকে বসবাসকারী যেসব অধিবাসী রয়েছে যেমন চাকমা , মারমা , লুসাই  এবং অন্যান্য যেসব আদিবাসীরা সহ বিভিন্ন জাতিগত গোষ্ঠী যাদের জীবনধারা দেখার মত অর্থাৎ অনেক ইন্টারেস্টিং যাইহোক তো আজকে আমরা জানবো সাজে কিভাবে যেতে হয় এবং সাজে গিয়ে আপনারা কি কি করলে একটা উত্তেজনাপূর্ণ অ্যাডভেঞ্চারের অনুভূতি নিতে পারবেন তাহলে চলুন আর দেরি কিসের শুরু করা যাক।

সাজেক ভ্যালিতে কি কি আছে ?

আপনারা হয়তো সবাই জানেন যে সাজেক ভ্যালি কোথায় অবস্থিত সাজেক ভ্যালির অবস্থান রাঙ্গামাটিতে এই জায়গাটি রাঙ্গামাটিতে হলেও সাজেক ভ্যালি সাধারণত যেতে হয় খাগড়াছড়ি যেতে হিনালা রয়েছে সেটা পার হয়ে। আর একটা উত্তেজনাপূর্ণ কথা হল সাজেক ভ্যালি যাওয়ার জন্য আমাদের একটা নদীপথ পার করতে হবে আর আমার মত আপনাদেরও হয়তো নদী ভ্রমণ করতে অনেক ভালো লাগে বুঝতেই পারছেন।

এত এত সুন্দর জায়গাতে যাচ্ছেন আবার তার মধ্যে যদি একটা নদী ভ্রমণ হয়ে যায় তাহলে ব্যাপারটা মজার হবে। অর্থাৎ আমার এতক্ষনের বকবকে আপনার হয়তো বুঝে গেছেন সাজেক ভ্যালি যেতে চাইলে আপনাদেরকে নদী পথে যেতে হবে। কি আর বলব আপনাদেরকে অসাধারণ ভাসা ভাসা মেঘের মধ্যে হেঁটে হেঁটে চলতে অসম্ভব মজা লাগবে।

তো আপনারা কি চান মেঘের সেই অপরূপ ভেলার মাঝে হারিয়ে যেতে, যদি আপনারা এই সুন্দর জায়গার ব্যাপক অনুভূতি গুলো নিতে চান তাহলে অবশ্যই সাজেক ভ্যালি একবার হলেও ভ্রমণ করতে আসবেন কারণ আকাশ ছুতে কে যায় না আর সাজেক ভ্যালি তেমনি একটা জায়গা যেখানে দাঁড়ালে মনে হবে আপনি মেঘের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন আর এর থেকে সুন্দর অনুভূতি আর কি হতে পারে বলুন।

শহরের ধুলাবালি আর এই জঘন্য ব্যস্ততার মধ্যে আপনারা কি এক মুহূর্ত শান্তিতে থাকতে পারেন বা প্রকৃতির অনুভূতি নিতে পারেন অবশ্যই নয় আমার নিজেরই সারা দিন দৌড়াদৌড়ি করতে করতে জীবন চলে যায় বুঝতেই পারিনা দিন কখন হয় রাত কখন হয় শুধু মনে হয় রোবটের মত জীবন কাটাচ্ছি কিন্তু বাস্তব কথা এটাই যে আমরা সবাই চাই একদিনের জন্য হলেও হ্যাপি থাকতে।

কিন্তু শহরের এই অসম্ভব বাস্তবতার মধ্যে কি হাসিখুশি থাকা সম্ভব একটা কথা কি জানেন জীবন অনেক সুন্দর। আর জীবনের এই সুন্দর মুহূর্ত গুলো করার জন্য সুন্দর জায়গা গুলোতে যাওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ তাই মেঘের মধ্যে যদি হারিয়ে যেতে চান আকাশ ছোঁয়ার অনুভূতি যদি পেতে চান তাহলে অবশ্যই একবার হলেও সাজেক ভ্যালি ঘুরে আসবেন। কারণ বাস্তব জীবনে সবাই চায় মেঘের অপরূপ সুন্দর রাজ্যের মাঝে হারিয়ে যেতে।

আর এর থেকেও ভালো কথা হলো সাজেক ভ্যালু মতো এত সুন্দর জায়গা আমাদের দেশেই রয়েছে তাহলে এই সুযোগকে হাতছাড়া করা উচিত হবে বলুন অবশ্যই না। যেখানে আপনি শুধু মেঘের দেখাই পাবেন না বরং প্রকৃতির সকল অপরূপ সৌন্দর্যের নাগাল পাবেন আপনার হাতের কাছে মনে হবে যেন আপনি প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে গেছেন। আর এজন্যই আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করছি মেঘের রাজ্য বসে থাকা বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জায়গাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি জায়গার কথা আর সেটা হচ্ছে সাজেক ভ্যালি।

আপনারা হয়তো জানেনসাজেক ভ্যালিকে বাংলাদেশের সকল সুন্দর জায়গা গুলোর মধ্যে সাজেক ভ্যালি একটি। প্রতিবছর অনেক পর্যটক এই জায়গাটিতে ঘুরতে আসে আর সেখানে নেটওয়ার্কের অভাব হলেও সৌন্দর্যের কোন কমতি নেই প্রকৃতি আকাশ ও মেঘের অপরূপ সৌন্দর্যে আপনার মনেই হবে না যে ফেসবুক চালাই হ্যাঁ তবে ফেসবুকে আপলোড দেয়ার জন্য ফটো তুলতে অবশ্য ইচ্ছা করবে।

সাজেক ভ্যালিতে গেলে আপনাদের মনে হবে যেন প্রকৃতির সকল সৌন্দর্য একই জায়গায় চলে আসছে। তাহলে চলুন দেরি না করে আপনাদেরকে ভালো করে বুঝিয়ে দিই কিভাবে আপনারা সেই মেঘের রাজ্য সাজেক ভ্যালিতে যাবেন কারণ যাওয়ার জন্য প্রসেস গুলো জানা অনেক জরুরী।

সাজেক ভ্যালি কোথায় অবস্থিত ?

প্রথমেই আপনাদেরকে জেনে নিতে হবে যে সাজেক ভ্যালি কোথায় আর এর সহজ উত্তর হল সাজেক ভ্যালি রাঙ্গামাটিতে আর তার থেকেও সহজ কথা হলো সাজেকখালি যদি যেতে হয় তাহলে আপনাদের প্রথমে ভাবতে হবে যে আমরা রাঙ্গামাটি যাব। এরপরে জানতে হবে সাজেক ভ্যালি রাঙ্গামাটির কোথায় অবস্থিত আর এর সহজ উত্তর হল সাজেক ভ্যালি রাঙ্গামাটি জেলার মধ্যে বাঘাইছড়ি যে উপজেলা রয়েছে তার মধ্যে অবস্থিত। এখন আপনাদের মনে অবশ্যই প্রশ্ন আছে বাঘাইছড়ি উপজেলাতে পৌঁছলাম এরপর কি করব ?

আরে বাবা আমি আছি তো নাকি সব বলছি আস্তে আস্তে। আমি আপনাদেরকে একটু কিছু উপজেলার কথা বললাম সেটা সাজেক ইউনিয়নের মধ্যে অবস্থিত ইউনিয়ন কি সেটা আপনারা প্রায় সবাই জানেন ইউনিয়নের একটি সুন্দর জনপ্রিয় ভ্রমণের জায়গা আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। এবার আপনাদের মনে প্রশ্ন আসছে সাজেক ইউনিয়ন চিনব কি করে ?

আমি আপনাদের জন্য ব্যাপারটা আরো সহজ করে দিচ্ছি ইউনিয়নের মধ্যে অবস্থিত মিজোরাম যে সীমান্ত রয়েছে সেখানেই সাজেক ভ্যালি অবস্থিত। কিন্তু আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো আমরা যদিও জানি সাজেক ভ্যালি রাঙ্গামাটিতে অবস্থিত কিন্তু সাজেক ভাইয়েরে যেতে হলে আমাদেরকে যেতে হবে খাগড়াছড়ি হয়ে বিষয়টা কেমন একটু পেঁচিয়ে গেল তাই না। প্যাচানোর কিছু নেই ব্যাপারটা খুবই সহজ রাঙ্গামাটি যাবেন কিন্তু খাগড়াছড়ি দিয়ে যাবেন।

এবার কথা হলো খাগড়াছড়ি দিয়ে কিভাবে যাবেন ? এটাও আমি বলে দিচ্ছি প্রথমে খাগড়াছড়ি শহরে যে দীঘিনার রয়েছে সেখানে যাবেন। এরপরে বাঘাইহাট পার হলেই আপনারা সাজেক ভ্যালিতে পৌঁছে যাবেন। আপনাদের উত্তেজনা বাড়ানোর জন্য বলে দিই শুধু সাজেক ভ্যালি সুন্দর তাই না সাবজেক্টগুলি যাওয়ার পথে আপনারা দেখতে পাবেন আশপাশের আশেপাশের অনেক সুন্দর মনোরম দৃশ্য এছাড়াও রয়েছেন রাস্তার দুই পাশে লাল-সবুজ রঙের বাড়ি আর তার সাথে রয়েছে পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে জমে ওটা অপরূপ সুন্দর মেঘের মেলা ।

এবার আপনাদের জানার সুবিধার্থে আরো কিছু তথ্য আপনাদেরকে বলে দি খাগড়াছড়ি হয়ে যে আপনাদেরকে সাজেক যেতে বললাম আপনাদের জানাটা দরকার যে খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের দূরত্ব কত টাকা খাগড়াছড়ি জেলা যে সদর রয়েছেন সেখান থেকে সাজেকের দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার আর দীঘিনালার যে কথা বলেছিলাম সেখান থেকে সাজেকের দূরত্ব ৪৯ কিলোমিটার। আপনাদেরকে আগে বলে দেয়া হয়েছে যে তারিখ যেতে হলে আপনাদেরকে নদী পথ হয়ে যেতে হবে।

অর্থাৎ রাঙ্গামাটি পৌঁছানোর পরে নদীপথ দিয়ে কাপ্তাই হয়ে অনেকটা পথ আপনারা সাজেকে হেঁটে যেতে পারেন আবার চাইলে গাড়ি নিয়ে যেতে পারেন। ওখানে ভাড়ার গাড়ি পাওয়া যায় তাই ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। সাজেক রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত হলে কি হবে সাজেক ভ্যালি যাওয়ার যাতায়াত এর যত সুবিধা সব খাগড়াছড়ি থেকেই। খাগড়াছড়ি শহর বা দীঘিনালা থেকে স্থানীয় গাড়িতে অর্থাৎ ওই যে বললাম ভাড়ার গাড়ি পাওয়া যায় তেমনি জিপ গাড়ি, সি.এন.জি, অথবা মটরসাইকেল করে সাজেকে যাওয়াই হচ্ছে বর্তমানে সবচেয়ে সহজ ওই ইন্টারেস্টিং উপায় । এভাবে ভ্রমণ করে দেখবেন সেই মজা লাগবে।

সাজেক ভ্যালি যাওয়ার উপায় ও সাজেক যাইতে কত টাকা লাগে?

এতক্ষণ অনেক পেচিয়ে আপনাদেরকে বললাম এবার একটু ধাপে ধাপে সাজিয়ে গুছিয়ে বলি। সাজেক ভ্যালি যেতে হলে আপনাকে যে কাজগুলো ধাপে ধাপে করতে হবে সেগুলো নিচে দেওয়া হল একটু কষ্ট করে নিচে দেখুন ;
সাজেক ভ্যালি যদিও বা রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত কিন্তু সাজেক ভ্যালি যেতে হলে হলে খাগড়াছড়ি দিয়েই যেতে হয় তাই আপনারা প্রথমে যে কাজটি করবেন সেটা হল আপনার দেশের যে প্রান্তেই থাকেন না কেন আপনাদের প্রথমে খাগড়াছড়ি এসে পৌঁছাতে হবে। খাগড়াছড়ি কোন বাসে থেকে আসবেন সেটা আপনাদের পছন্দের বিষয়।

এছাড়াও আপনাদের সুবিধার জন্য জন্য বলে দিই ঢাকা থেকে যদি খাগড়াছড়ি আসতে চান তাহলে ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি আসার যে মেইন বাস সেটা হচ্ছে শান্তি পরিবহন। এছাড়াও আরো অনেক বাস রয়েছে যেমন  সৌদিয়া, শ্যামলী, ঈগল, হানিফ, এসব বাসে করেও আসতে পারেন। তবে আর একটা কথা সেটা হলো আপনারা যদি এসি বাসে আসতে চান তাহলে খরচ একটু বেশি করবেন আর যদি নন এসি বাসে আসেন তাহলে খরচ করবেন মোটামুটি ৫২০ টাকার মতো।

আর এসি বার যেগুলো রয়েছে তার মধ্যে রয়েছে শান্তি, হানিফ, ঈগল ও সেন্টমার্টিন পরিবহনের বাস গুলো। এসি বাস র ভাড়া মোটামুটি  ৯৫০ থেকে ১২৫০ টাকার মতো। আপনাদের সুবিধার জন্য বলে দি ঢাকার গাবতলী, কলাবাগান, ফকিরাপুল ও আরামবাগ থেকে এসব বাস ছাড়া হয়ে থাকে। আর একটা কথা লাস্ট যে বাস রয়েছে সেটা রাত এগারোটার মধ্যে ছেড়ে চলে যায়।

আপনাদের জানার সুবিধার্থে আর একটা কথা বলে দিই সরকারী যেসব ছুটির দিন থাকেন বা বৃহস্পতিবার শুক্রবার এসব দিনে যদি আপনারা যেতে চান তবে আগে থেকেই অবশ্যই টিকিট কেটে রাখবেন না হলে পরে টিকিট সংক্রান্ত ঝামেলা সম্মুখীন হতে পারেন। যেহেতু সাজেক ভ্যালি যাওয়ার প্রথম যাত্রা বাসে শুরু হবে প্রথম থেকে সতর্কতা অবলম্বন করা ভালো যাতে করে আপনাদের আনন্দে কোন রকম বিঘ্ন না ঘটে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন। তো এতক্ষণে বুঝে গেছেন সাজেক ভ্যালি্র ভ্রমণ খরচ বাস থেকে শুরু হবে।

ঢাকা থেকে সাজেক ভাড়া কতো ?

আপনাদের মধ্যে অনেকেরই মনে প্রশ্ন থাকেন ঢাকা থেকে সাজেক যদি যেতে চাই তাহলে ভাড়া কত লাগবে তো আপনাদের সুবিধার জন্য বলে দিন ঢাকা থেকে সাজেকদের বাস যায় সেটার নাম আমি আগেও বলেছি এখনও বলছি সেই বাসটির নাম হলো শান্তি পরিবহন। একটা কথা আপনাদেরকে উপরে বলা হয়েছে যে সাজেক হলে রাঙ্গামাটিতে হলেও যেতে হয় খাগড়াছড়ি দিয়ে।

তাই আপনারা যে কাজটি করবেন সেটা হল ঢাকা থেকে সরাসরি শান্তি পরিবহন বাসে উঠবেন এবং ডাইরেক্ট খাগড়াছড়ির যে দীঘিনালা নামক জায়গায় রয়েছে সেখানে নামবেন। ঢাকা থেকে দীঘিনালা পৌঁছানোর আপাতত যে ভাড়া রয়েছে সেটা হল ৫০০ থেকে ৫৮০ টাকার মতো। আপনাদের সুবিধার জন্য আরেকটা কথা বলে দেওয়া ভালো যে। ঢাকা থেকে শুধুমাত্র শান্তি পরিবহন নামক বাসটি দেখে নালা পর্যন্ত যায় অন্যান্য বাস নাও যেতে পারে তাই অবশ্যই গেলে শান্তি পরিবহনে যাবেন। 

ঢাকা থেকে সাজেক কিভাবে যাবেন ?

সাজেক ভ্যালি যাওয়ার জন্য কোন জায়গা থেকে কোন জায়গাগুলোতে যেতে হবে সেগুলো এখন আমি আপনাদের ধাপে ধাপে বলে দিব আপনার একটু কষ্ট করে নিচের দিকে দেখলে সব জানতে পারবেন ;
  • ঢাকা থেকে সাজেক ভ্যালি যাওয়ার জন্য প্রথমে আপনাদেরকে শান্তি পরিবহন নামক যে বাস রয়েছে সেখানে ওঠে ঢাকা থেকে সরাসরি খাগড়াছড়ির রাঙ্গামাটির দীঘিনালা যেতে হবে।
  • আর আপনাদেরকে আগেই বলে দেয়া হয়েছে শান্তি পরিবহনই একমাত্র পরিবহন যারা দীঘিনালা পর্যন্ত যায়। ভাড়া লাগবে ৫৫০-৫৮০ টাকার মতো।
  • এবার আপনারা যে কাজটি করবেন সেটা হচ্ছে দেখে নানা নাম্বার পড়ে সেখানে সাজেক যাওয়ার জন্য অনেকগুলো ভাড়া গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে সেখান থেকে যে কোন একটা গাড়ি বেছে নিয়ে অর্থাৎ ভাড়া করে নিয়ে যেটাকে সাধারণত চান্দের গাড়ি বলা হয়ে থাকে সেই গাড়িতে করে সাজেক যেতে হবে। ভাইরে একটু বেশি চাইবে যেমন ৭ থেকে ৮ হাজার টাকার মত একটু দরকার কষাকষি করলে একটু কমতে পারে।
  • সাধারণত যখন অফ সিজন চলে তখন যদি দরখাসি করা যায় তাহলে৫/৬ হাজার টাকায় রাজি করানো সম্ভব। সিজনে আরও বেশি ভাড়া চায় ওরা।
  • তো যেকোনো একটি গাড়ি ভাড়া করে নেওয়ার পরে সকালল ১১টার দিকে যে আর্মি এস্করেট রয়েছে সেখান থেকে আপনাদের গাড়ি সহ অন্যান্য যাত্রীবাহী গাড়িগুলো সাজেকের উদ্দেশে রওনা হবে।
  • আরেকটা আর্মি এস্করট পাবেন বিকাল ৩টার দিকে। আপনারা যদি সাজেকে একদিন থাকেন তাহলে যে গাড়িগুলো আপনাদের সাথে যাবে সেগুলো ওখানে আপনাদের সাথে একদিন থাকবে।
  • আর যদি যেদিন গেছেন সেদিনই ফিরে আসতে চান তাহলে ১১টার গাড়িতে সাজেক গিয়ে ৩টার গাড়িতে ফিরতে হবে। আমার মতে সাজেকের মত জায়গায় গিয়ে একদিন না থেকে চলে আসাটা বোকামি হবে অর্থাৎ যদি 11 টায় গিয়ে তিনটায় চলে আসতে হয় তাহলে কি দেখবেন আর কি ঘুরবেন পুরোটাই আফসোস হবে এজন্য অবশ্যই গেলে একদিন থাকবে এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত আর কি।
  • কারণ সাজেকের আসল মজা হলো বিকালের যে সময়টা তখন থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত ।
  • পরের দিন যখন আপনারা বাড়ির জন্য রওনা হবেন তখন ফেরার সময় সকাল ১১টার গাড়ি আপনাকে নিয়ে গিয়ে দীঘিনালা নামিয়ে দিয়ে আসবে।
  • এমনভাবে ড্রাইভারের সাথে চুক্তি করতে হবে যেন ড্রাইভার আপনাকে সাজেক, কংলাক পাড়া, কমলা বাগান এসব জায়গা ভালো করে ঘুরিয়ে দেখায়।
আমি আপনাদের উত্তেজনা বাড়ানোর জন্য আরেকটা কথা বলে দিই আপনার যদি সাজেক জান তাহলে অবশ্যই সাজেক থেকে ফেরার পথে যে হাজাছরা নামক জায়গাটি রয়েছে সেখানে গাড়ি থামিয়ে অবশ্যই হাজাছরা ঝর্ণায় যেতে ভুলবেন না। ওখানে গেলে অনেক মজা পাবেন।

চট্টগ্রাম থেকে সাজেক কিভাবে যাবেন ?

আপনাদের কে আছেন যারা জানতে চান চট্টগ্রাম থেকে সাজে কিভাবে যেতে হবে ? তো আমি আপনাদের ভালো করে বুঝিয়ে দিই আপনারা যদি চট্টগ্রাম থেকে সাজিয়ে যেতে চান তাহলে কিভাবে যাবেন ?
  • চট্টগ্রাম থেকে সাজেক যেতে হলে প্রথমে চট্টগ্রামের যে কদমতলী বাসস্ট্যান্ড রয়েছে সেখান থেকে বিআরটিসির এসি বাস ছাড়া হয় খাগড়াছড়ির যাওয়ার জন্য।
  • দিনের বেলা এসি বাস থাকে মাত্র ৪টি। আর এ ধরনের বাসে ভাড়া নেওয়া হয় ২০০ টাকার মতো।
  • এছাড়া আপনারা হয়তো অক্সিজেন নামক যে মোড় রয়েছে সেটা চিনবেন সেখান থেকে ১ ঘন্টা পরপর শান্তি পরিবহনের বাস গুলো ছাড়া হয়।  ভাড়া পড়বে ১৯০ টাকার মতো।
  • চট্টগ্রাম থেকে বাসে খাগড়াছড়ি যেতে হলে সময় লাগবে ৪ থেকে ৫ ঘন্টা।
  • একটু আগে চট্টগ্রামের অক্সিজেন মোড় নামক যে মোড়টির কথা বললাম সেখানে থেকে শান্তি পরিবহনের বাস এবং লোকাল বাস ছাড়া হয়ে থাকে।
  • এক্ষেত্রে এসি ন-এসি দুই ধরনের বাস সেখানে আপনারা পাবেন।
  • শান্তি পরিবহনের যে নন-এসি বাসগুলো রয়েছে সেখানে ওরা ভাড়া নিবে ১৯০ থেকে ২০০ টাকার মতো।
  • আর এসি বাসের ভাড়া সাধারণত নিবেন ৩৫০ টাকার মতো।
  • খাগড়াছড়ি পৌঁছানোর পরে আপনারা কি করবেন সেটা আপনাদের বলে দিয়েছি তাও আর একবার বলে দিন খাগড়াছড়ি পৌছে যাওয়ার পরে চান্দের গাড়ি কিংবা সিএনজি করে আপনারা সাজেক পৌঁছাতে পারবেন।

সাজেকে কম খরচে থাকার জন্য সুন্দর কিছু জায়গা

যেহেতু সাজেক একটি ভ্রমণের জায়গা সেও তো যেখানে থাকার জায়গা বা হোটেল এবং  রিসোর্ট তো থাকবেই কিন্তু আপনাদের মধ্যে অনেকেই জানতে চান যে এসব রিসোর্টের ভাড়া কেমন করবে থাকতে কেমন খরচ হবে কারণ কোথাও যেতে হলে অবশ্যই বাজেটটা ভালোমতো দেখেশুনে যাইতে হয় আমি যতটুকু জানি আপনাদেরকে বলছি রাজাকে সাধারণত ছোট বড় অনেক হোটেল বা রিসোর্ট রয়েছে প্রায় ১০০ টার মতো এসব জায়গাতে একদম যদি কম বলি তাহলে ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫০০০ টাকার মতো ভাড়ার ঘর পাওয়া যাবে তবে যদি আপনি শুক্রবার বা সরকারি ছুটির দিনগুলোতে যেতে চান তাহলে আমি বলব একমাস আগে থেকে রুম বুক করে নিয়ে ভালো টাকা একটু বেশি খরচ হবে তবে সেটাই ভালো কারণ ভালো রিসোর্ট গুলোতে আগে থেকে রুম বুক হয়ে যায় আপনারা যখন রিসোর্ট বাছাই করবেন অবশ্যই থাকার ব্যবস্থা কেমন খাওয়ার ব্যবস্থা কেমন এগুলো বেশি দেখবেন আর ভিউ তো বাইরে ঘুরতে গেলে পাবেনি আশা করি আমি যা বলতে চাইছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। 

রিসোর্টের অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।অনেক হোটেল আছে যেগুলো সাজেকের বাইরে আবার অনেকগুলো রয়েছে একদম মেইন পয়েন্টে। আপনারা অবশ্যই চাইবেন না সাজেক থেকে দূরের কোন হোটেলে থাকতে অবশ্যই হোটেল নিলে মেইন পয়েন্টে নিবেন এতে করে আপনার ঘোরাঘুরি করতে অনেক সুবিধা হবে আর না হলে সময় অনেক নষ্ট হবে আর রিসার্চের ক্ষেত্রে বিশেষ করে দেখবেন যে বাথরুম কেমন থাকার জায়গা কেমন এগুলো ভিউ কমবেশি বাইরে গেলেই দেখতে পাবেন কিন্তু ভেতরের অবস্থা খারাপ হলে থেকে শান্তি পাবেন না আর মন খারাপ হয়ে যাবে

কম খরচের রিসোর্টগুলো আপনার সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ খরচ কমাতে সাহায্য করবে। যারা একটু কম খরচে সাজেক ভ্যালি ঘোরাঘুরি করতে চান তাদের জন্য কিছু কম খরচের হোটেলগুলো আমি  নিচের দিকে দিয়ে দিলাম ;

  • আলো রিসোর্ট ;- কম খরচে থাকার জন্য এটি একটি ভালো রিসোর্ট। ভিউ তেমন পাবেন না । এই হোটেলে রুম আছে ৬ টা। রুম ভাড়া লাগবে রাত প্রতি ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকার মতো।
  • লুসাই কটেজ ;- কাপল ডাবল সব ধরনের ঘর আছে এখানে। মোটামটি ভালো একটি রিসোর্ট। রুম ভাড়া লাগবে ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকার মতো।
  • মেঘের ঘর রিসোর্ট ;- কম খরচে থাকতে হলে এটি সাজেকের আরও একটা ভালো রিসোর্ট। এখানে ৮টা রুম আছে। এখানে রুম ভাড়া পড়বে ৬০০ থেকে ১২০০ টাকার মত ।
  • হাফং তং ; এটিও বাজেটের মধ্যে একটি রিসোর্ট। এই রিসোর্টে ৬টা ঘর আছে । রুম ভাড়া পড়বে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকার মতো।
  • আদিবাসী ঘর ; আপনারা চাইলে কম খরচে আদিবাসীদের ঘরে থাকতে পারেন। জনপ্রতি লাগবে ১৫০ – ৩০০ টাকার মতো। বন্ধু বান্ধব মিলে থাকার জন্য এটা ভালো জায়গা।

সাজেক ভ্যালি ভ্রমন খরচ ও সাজেকে খাওয়ার ব্যবস্থা

ঘরাঘুরির সময় সাজেক ভ্যালিতে থাকা খাবার খরচ এক্তু বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে আপনারা যদি গ্রুপ করে যান তাহলে খরচ কমানো সম্ভব। তারপরও সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ খরচ সম্পর্কে একটা ধারণা দিয়ে দিচ্ছি আমি আপনাদেরকে ওখানে গেলে জিভ ভাড়া লাগবে মোটামুটি আর থেকে ১১ হাজার টাকার মতো তবে আপনারা যদি অনেক বেশি ঘুরেন বা অনেক জায়গাতে অনেকক্ষণ ধরে ঘোরাঘুরি করেন তাহলে জীব ভাড়া সেটার উপরে নির্ভর করবে অর্থাৎ তারা নির্ধারণ করে দিবে যে আপনারা কত টাকা তাদের দিবেন। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

আমার জানামতে এক জীবের সাধারণত ১০ থেকে ১১ জন মানুষ বসা যায় আর আপনারা ঘুরতে গেলে অবশ্যই খাওয়া-দাওয়া করবেন এক্ষেত্রে আপনাদের খাওয়ার জন্য প্রতিবেলাতে খরচ হতে পারে সে থেকে ২০০ টাকার মতো এছাড়াও বিভিন্ন জায়গাতে ঘুরতে যাবেন সেখানে এন্ট্রি ফি লাগবে ঢোকার জন্য টাকা নিবে তারা সেখানে দেড়শ টাকার মতো খরচ হবে। আর কটেজ ভাড়া লাগবে জনপ্রতি ৫০০ টাকার মতো। আর একটা কথা জানেন কি বর্ষাকালে সাজেক ঘুরতে গেলে খরচ কম হয়। তখন মেঘও বেশি দেখা যায়।  তো আপনারা চাইলে বর্ষাকালে ঘুরতে যেতে পারেন।

 

যেহেতু সাজেক একটি ভ্রমণের জায়গা তোর ঘোরার জায়গা সেখানে অনেক হোটেল থাকা স্বাভাবিক অর্থাৎ খাওয়ার জায়গা তো সাজেকে অনেক রেস্টুরেন্ট রয়েছে এবং তাদের নিজস্ব নিজস্ব খাবার ব্যবস্থা রয়েছে এক্ষেত্রে যদি আপনারা খাবার দাবার রেস্টুরেন্টে খেতে চান তাহলে আপনার মোটামুটি খরচ  করবে ১৫০ থেকে ২৫০ বা ৩০০ টাকার মতো খাবারের মেনুতে পাবেন ভাত মুরগি শাকসবজি আলু ভর্তা মাছ ভর্তা এগুলো আশা করি বুঝতে পেরেছেন।


আপনার সাজেকে ঘুরতে গিয়ে অনেক ভালো ভালো রেস্টুরেন্টে পেঁপে কলা আনারসহ অনেক সুস্বাদু পাহাড়ি ফল পাবেন খুব সস্তায় সেগুলো খেয়ে পরক করতে একদম ভুলবেন না আর সস্তায় পেলে আমরা বাঙালি কিনা খাই এটা একমাত্র আমরা যারা খাঁটি বাঙালি তারাই বুঝবো আপনাদের সাথে অনেক কথা বললাম। আশা করি আপনারা একটু হলেও জানতে পেরেছেন কিভাবে যেতে হয় এবং সেখানে গেলে আপনারা কি কি ফেসিলিটি পেতে পারেন এগুলোই আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করলাম আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন আর যদি বুঝতে অসুবিধা থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। তো আজকের মত এটুকুই দেখা হবে আবার নতুন কোন বিষয় নিয়ে নতুন কোন জায়গা নিয়ে।

লেখকের মন্তব্য

সাজেক ভ্যালিযেতে সবাই চাইবে কারণ জায়গাটা অসম্ভব সুন্দর আর যেহেতু জায়গাটা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভরপুর সে হয়তো প্রকৃতির প্রেমে যারা রয়েছে তারা অবশ্যই সেখানে যাবে আর তাদের কাছে জায়গাটা অনেক দর্শনীয় স্থান বলে মনে হবে আমার কাছেও জায়গাটা ছবিতে দেখেই অনেক সুন্দর লেগেছিল আর বাস্তবে তো কেমন লেগেছিল কি বলব আপনারা যদি চান তাহলে অবশ্যই জানতে পারবেন তো আমি আপনাদেরকে একটাই কথা বলব জীবনকে যদি উপভোগ করতে চান তাহলে সুন্দর সুন্দর জায়গায় যান অবসর সময়কে উপভোগ করুন বউয়ের সাথে ঝগড়া না করে বউকে নিয়ে সাজেক জান। আর যদি বউ না থাকে তাহলে বন্ধুদের নিয়ে যান সবাই অনেক আনন্দ করুন ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি
সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আকাশ সিটির নীতিমালা দেখে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url