টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার

জেনে নিন জন্ডিস রোগের কিছু লক্ষণ ও প্রতিকারআপনাদের মধ্যে অনেকেই টাইফয়েড জ্বরের কথা শুনেছেন আবার অনেকে এ রোগে ভুগছেন। টাইফয়েড রোগ সাধারণত নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়ে থাকে। অনেক সময় বাইরের পানি খাওয়ার কারণে হয়ে থাকে, অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি খাওয়ার কারণে হয়ে থাকে, শরীরের সঠিকভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ধরে না রাখার কারণে হয়ে থাকে। টাইফয়েড জ্বর প্রথম দিকে সাধারণ জ্বরের মতই প্রভাব ফেলে। পরবর্তীতে গিয়ে আস্তে আস্তে এই রোগের প্রভাব বাড়তে থাকে আর রোগী ধীরে ধীরে আরো অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে থাকে। তাই এই রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা থাকা সবার জন্যই জরুরী।


আমরা প্রায় সময় শহরে দেখতে পাই প্রয়োজনের থেকে অতিরিক্ত বেশি পরিমাণে গরম পড়ে থাকে। আর গরম পড়লেই বেড়ে যায় বাইরে ঠান্ডা পানি খাওয়ার পরিমাণ অর্থাৎ বাইরে যে ঠান্ডা শরবতগুলো পাওয়া যায় আর কি ! সেগুলো। গরমের সময় ওই ঠাণ্ডা সরবতগুলো খেতে বেশ মজাই লাগে। কিন্তু আপনারা কি জানেন বাইরের এসব খাবার আপনার শরীরের কতোটা ক্ষতি করছে।  টাইফয়েডের জীবাণু ছড়িয়ে থাকে সাধারণত অনিরাপদ পানি ও অস্বাস্থ্যকর খাবারগুলোর কারণে। কিন্তু আপনারা যদি একটু  সচেতন হন এরকম কঠিন  এর সংক্রমণ বা রোগ এড়ানো সম্ভব। আর সেজন্যই আমরা আজকে  আলোচনা করবো টাইফয়েড জ্বরের কারণ , লক্ষণ ও চিকিৎসা নিয়ে।

টাইফয়েড জ্বর কি ?

যেহেতু এই রোগের নাম টাইফয়েড জ্বর সেহেতু সহজ ভাষায় বলতে গেলে এটা এক ধরনের জ্বর। কিন্তু কোন সাধারণ জ্বর না। সাধারণ জ্বর আসলে আমরা সাধারণত ওষুধ খেলেই সেটা সেরে যায় কিন্তু আপনার যদি টাইফয়েড জ্বর হয় তাহলে শুধুমাত্র ওষুধে সেটা সারবে না। এই ধরনের জ্বর সাধারণত অপরিষ্কার পানি এবং খাদ্য খাওয়ার জন্যই যে সকল জীবাণু আমাদের শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে সেগুলোর কারণেই হয়ে থাকে।

আপনাদের মধ্যে এমন অনেকেই রয়েছেন যারা নিয়মিত গোসল করতে আলসেমি করে আপনাদের কথা কি বলছি অনেক সময় আমারই গোসল করতে অনেক আলসেমি কাজ করে। কিন্তু সত্য কথা হলো বেশিরভাগ সময় শরীর অপরিষ্কার রাখার কারণেই এই টাইফয়েড রোগটি আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। এছাড়াও বলা হয়ে থাকে টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত রোগীর মলের মাধ্যমেও এইসব জীবাণু পরিবেশে ছড়িয়ে থাকে আর তাছাড়াও হাতের মাধ্যমেও এই রোগটি ছড়ানোর ঝুঁকি থেকে যায়।

আমরা যারা শহরে বসবাস করি তাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই বাইরে খাওয়া দাওয়া করে কিন্তু আমরা কি জানি হোটেলের এসব খাবার কতটা অস্বাস্থ্যকর কিন্তু বাধ্য হয়ে খেতে হয়। কারণ বেশিরভাগ হোটেলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খাবার বানানো হয় না। যার কারণে বাইরের খাবার খাওয়ার কারণে আমাদের শরীরে অপুষ্টি অনেক বেড়ে যায় আর আমরা এই রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ি। তাছাড়াও জানা গেছে যে অনেক সময় টাইফয়েড জ্বর থেকে সুস্থ হয়ে যাওয়ার পরও অনেক রোগির ভেতরে এই রোগের কিছু ব্যাকটেরিয়া থেকেই যায়।

যার কারণে পরবর্তীতে সে আবার অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। তাহলে বুঝতেই পারছেন শরীরের উপর খেয়াল রাখাটা কত গুরুত্বপূর্ণ আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন টাইফয়েড হয় জ্বরটা কি এটা একটা মারাত্মক জ্বর আমার নিজেরও হয়েছে মনে হয়েছিল আর কি আর যে কয়দিন জ্বরটা ছিল আমার ওপর দিয়েছে কি গেছে আমি নিজেই জানি তাই আপনাদেরকে সতর্ক করার জন্য এই পোস্টটি লিখলাম।

টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ

টাইফয়েড জ্বর আমাদের যখন হয় তখন প্রথম প্রথম আমরা আন্দাজি করতে পারব না যে আমাদের এত বড় রোগ হয়েছে। আমরা ভাববো এটা হয়তোবা কোন সাধারণ জ্বর আসছে আবার সেটা হয়ে যাবে কিন্তু আসলে ব্যাপারটা তেমন নয় এটা আস্তে আস্তে শরীরে জায়গা করে বাড়তেই থাকে। চিকিৎসকরা বলেছেন, যে রোগ জীবানুর কারণে টাইফয়েড জ্বর হয়ে থাকে সেগুলো শরীরের প্রবেশের ঠিক ১০ থেকে ১৪ দিন পর থেকে টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ আস্তে আস্তে প্রকাশ পেতে থাকে।

তারপরে আস্তে আস্তে এই জ্বরের লক্ষণগুলো খারাপ রূপ ধারণ করতে থাকে অর্থাৎ শরীরের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যায়। জানা গেছে যে, টাইফয়েড জ্বর সাধারণত একজন মানুষের শরীরে তিন থেকে চার সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। আপনাদেরকে একটা মজার কথা বলি এই রোগের প্রথম লক্ষণ হচ্ছে একদম সাধারণ জ্বর অর্থাৎ প্রথমে আপনার শরীরে একদম সাধারণ তাপমাত্রা জ্বর আসবে। যেটা আপনার কাছে কিছুই মনে হবে না মনে হবে যে এটা আবার কোন জ্বর হলো নাকি !

কিন্তু পরবর্তীতে আস্তে আস্তে আপনার শরীরের বারোটা বাজাবে। তো সাধারণ জ্বর আসার পরে আস্তে আস্তে যখন পাশ থেকে ছয় দিন কেটে যায় তখন দেখবেন আস্তে আস্তে আপনার শরীরে একবার জ্বর আসছে আবার একবার ছেড়ে যাচ্ছে। এমন ভাবে কিছুদিন চলতে থাকবে তবে সম্পূর্ণভাবে এই কয়দিনে জ্বর একবারও ছেড়ে যাবে না আসবে যাবে এরকম ভাবে থাকবে।

তাই সতর্ক থাকার জন্য টাইফয়েড জ্বর হলে প্রথম প্রথম আপনার শরীরে কি কি লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো জেনে নেয়ার খুবই জরুরী তো চলুন আর দেরি না করে জেনে নেই টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি লক্ষণ দেখা যায়। টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণগুলো নিচে দেওয়া হলো ;-

  • আপনার শরীরে যখন টাইফয়েড প্রবেশ করবে তখন প্রথমত কিছুদিন আপনার টানা জ্বর থাকবে অর্থাৎ সাধারণ জ্বর অর্থাৎ আপনার কাছে মনে হবে এটা তেমন কোন চিন্তার ব্যাপার না।
  • পরে আস্তে আস্তে আপনার শরীরে জ্বরের তাপমাত্রা বাড়তেই থাকবে। তখন আপনার মনে হবে না জ্বরের পরিমাণটা একটু বেশি হয়ে গেলো অর্থাৎ তখন আপনি বুঝতে পারবেন না যে আপনার টাইফয়েড হয়েছে।
  • এরপর শুরু হবে আপনার শরীরের বারোটা বাজা অর্থাৎ মাথা ব্যথ্‌ শরীর ব্যথা, চুলের গোড়াব ব্যথা, চুল পরা আর শারীরিক দুর্বলতার কথা তো বাদই দিলাম এগুলো সব আপনার সাথে হতে থাকবে আস্তে আস্তে।
  • তারপর দেখতে পাবেন, আপনার পেট খারাপ হওয়া শুরু করছে অর্থাৎ পাতলা পায়খানা হবে আর কি ! আস্তে আস্তে আপনি নিজের উপর বিরক্ত হয়ে যাবেন নিজের উপর না আসলে এই জ্বরের উপর।
  • এরপর যেটা হবে সেটা হচ্ছে আপনার মুখ থেকে খাওয়ার রুচি একদম চলে যাবে মানে আপনার কিছুই খাইতে মন চাইবে না।
  • এরপরে যেটা হবে সেটা শুনলে আপনি ভয় পাবেন তাও বলেই দিই এরপর আপনার বমি হওয়া শুরু করবে। বুঝুন তাহলে একে খাওয়ার রুচি নেই আবার সাথে বমিও হচ্ছে শরীরে কি আর কিছু থাকবে।
  • এরপরে সেই লেভেলের ঠান্ডা লেগে যাবে আপনার মানে খালি কাশি হবে। ভাবলেই কেমন ভয় লাগছে তাই না !
  • এরপর শুরু হবে পেটে ব্যথা হওয়া যা আপনাকে মারাত্মক পরিমাণে যন্ত্রণা দিবে।
তো এতগুলো লক্ষণ যখন দেখা দিবে তখন কি আপনি আর ঘরে বসে থাকবেন অবশ্যই না এরপর আপনাকে সরাসরি চলে যেতে হবে হসপিটালে। আর ডাইরেক্টলি যেটা করতে হবে সেটা হচ্ছে আপনার রক্তের পরীক্ষা। যার মাধ্যমে আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন যে আপনার আসলেই কি রোগ হয়েছে। আমি আসলে রক্ত পরীক্ষার পরে জানতে পেরেছিলাম আমার টাইফয়েড হয়েছে।

এ ছাড়াও আপনাদের মধ্যে যদি কেউ আগেই বুঝতে পারেন যে, আপনাদের টাইফয়েড হয়েছে তাহলে আর দেরি না করে সাথে সাথে প্রাথমিক অবস্থাতেই ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং তিনি যা বলবেন সে অনুযায়ী অনুযায়ী যদি আপনারা চলতে পারেন তাহলে এই রোগের , জটিলতা আপনারা এড়াতে পারবেন।

তবে বর্তমান সময়ে এসে রোগ পরীক্ষা করার জন্য সবথেকে উত্তম মাধ্যম হলো রক্ত পরীক্ষা করা এর মাধ্যমে আপনি নিশ্চিত হয়ে যাবেন যে আপনার এক্সাক্টলি কি রোগ হয়েছে। আর টাইফয়েড হলে যে রক্ত পরীক্ষা করতে হয় সেটাকে সাধারণত ব্লাড কালচার নামক রক্ত পরীক্ষা বলা হয়ে থাকে।

রক্তে যদি ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া যায় তাহলে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকরা টাইফয়েড হয়েছে বলে নিশ্চিত করে দেন । তারা যদি পরীক্ষা করে দেখতে পান যে আপনার শরীরে টাইফয়েডের জীবাণু রয়েছে তাহলে তারা আপনাকে টাইফয়েড নামে এই জ্বরটির জন্য সাধারণত প্যারাসিটামল আর ১০ থেকে ১৪ দিনের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার পরামর্শ দিবে।

অনেক সময় দেখা যায় অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ খাওয়া শুরু করার পরে পাঁচ দিনের মধ্যে অনেক রোগী সেরে উঠেন। যেটা অনেক ভালো একটা বিষয় কারণ এই রোগ যার হয় সে চাইবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যেন আমি সুস্থ হয়ে যাই।

টাইফয়েড হলে শরীরে কি কি ক্ষতি হয় ?

সালমোনেলা টাইফি নামক যে ব্যাকটেরিয়া রয়েছে তার সংক্রমণের কারণে যে রোগ হয়ে থাকে সেই রোগকে টাইফয়েড রোগ বা টাইফয়েড জ্বর বলা হয়ে থাকে। টাইফয়েড জ্বরের আরও একটি নাম রয়েছে সেটা হল এন্টারিক ফিভার। টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ প্রথম প্রথম খুবই সাধারণ থাকে কিন্তু আস্তে আস্তে সেটা তীব্র আকার ধারণ করে।

একজন রোগী যদি টাইফয়েড রোগ হওয়ার পরে সঠিক চিকিৎসা না পায় তাহলে এটা আস্তে আস্তে অনেক ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করবে কারণ টাইফয়েড রোগের এই ব্যাকটেরিয়া তার পুরো শরীরে আস্তে আস্তে ছড়িয়ে যাবে এরপর বুঝতেই পারছেন কি মারাত্মক লেভেলের জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। চিকিৎসা শাস্ত্র থেকে জানা গেছে , অতিরিক্ত পরিমাণে দূষিত খাবার, পানি এবং দুধ খাওয়ার কারণে এই ব্যাকটেরিয়া আমাদের শরীরে প্রবেশ করে থাকে।

গ্রামের মানুষের কথা বাদই দিলাম বিশেষ করে শহরের মানুষ যারা বেশিরভাগ সময় বাইরে থাকে তারা ঘরের বাইরের অপুষ্টিকর খাবার এবং অপরিষ্কার শাক-সবজি ও কাঁচা-ফলমূল অনেক বেশি পরিমাণে খেয়ে থাকে। কিন্তু তারা হয়তো জানেই না যে , এই খাবারগুলো টাইফয়েড রোগের জীবাণুর অন্যতম উৎস।

যদি তারা সবাই জানতো প্রশিক্ষণ খাবারগুলো খেয়ে তাদের কি পরিমাণে ক্ষতি হচ্ছে তাহলে তারা কখনোই বাইরের ঐ অপরিষ্কার ও অপুষ্টিকর খাবার গুলো খেতে না। অনেক সময় যারা আক্রান্ত রোগী তারা বাইরে গিয়ে তাদের মলত্যাগ করে থাকে যার কারণে তার শরীরের ভেতরে থাকা ব্যাকটেরিয়া বাইরে ছড়িয়ে পড়ে।

আর এর কারণে বাইরে থাকা অনেক সাধারণ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। তাই আপনাদের কাছে আমার আবেদন থাকবে যারা টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত রোগী তারা অবশ্যই এ বিষয়গুলোতে সতর্ক থাকবেন আপনাদের শরীরে থাকা ব্যাকটেরিয়া যেন অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে না দেয় সে বিষয়ে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন।

আপনাদের কাছে একটা মজার কথা শেয়ার করি আমারও একবার টাইফয়েড হয়েছিল কিন্তু আমি প্রথম প্রথম বুঝতেই পারিনি যে , আমার এমন একটা রোগ হয়েছে আমি ভেবেছি প্রতিবারের মতো এবারও আমার সাধারণভাবে এমনিতে জ্বর আসছে। তো আস্তে আস্তে জ্বর বাড়তে থাকলো এরকম করতে করতে জ্বর আসে আবার যায়। তো হুট করে একদিন আমি ওয়াশ রুমে গেলাম ফ্রেশ হতে ওয়াশ রুমের দরজা লক করলাম লক করার পরে হুট করেই মাথা ঘুরে পড়ে গেলাম।

তারপরে মনে হয় ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরে আমার জ্ঞান আসছিল। যেহেতু আমি ব মেসে থাকি সেহেতু তেমন কেউ লক্ষ্য করেনি যে আমি আসলে ওয়াশরুমে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেছি। আর কারো না বুঝতে পারাই স্বাভাবিক। কারণ অনেকগুলো ওয়াশরুম থাকে মেসে তো যখন জ্ঞান ফিরলো তখন দেখলাম যে, আমি নিচে পড়ে আছি তখন একা একাই মাথায় পানি দিলাম এবং আস্তে আস্তে রুমে আসলাম।

আর সেই যে আমি বিছানায় শুইলাম আর উঠতে পারিনি পরে বাসায় জানানোর পর আব্বু এসে আমাকে নিয়ে বাসায় গেলো এবং পরে আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলো প্রায় দু সপ্তাহ হাস্পাতালে থাকার পরে আমি সুস্থ হয়েছিলাম। আপনারা কি জানেন দু সপ্তাহের মধ্যেও যদি টাইফয়েড না সারে তাহলে এই রোগের সংক্রমণ মস্তিষ্কে পৌঁছানোর আশঙ্কা থাকে আর সেখান থেকে কোমা এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিষয়টা খুবি ভয়ানক তাই না। টাইফয়েডের জটিলতাগুলা মারাত্মক ক্ষতিকর ও বিপজ্জনক হতে পারে। টাইফয়েড শরীরে লম্বা সময়ের জন্য ন জটিলতা তো সৃষ্টি করেই এছাড়াও , টাইফয়েড জ্বরের কারনে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। ফলে কোনোভাবেই একে অবহেলা করাটা বোকামি হবে।

টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত ?

সাধারণত টাইফয়েড জোরে যারা আক্রান্ত হয় এসব রোগীর শরীর অনেক দুর্বল হয়ে থাকে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পরে জ্বর সারতে ভালোই সময় লাগে এবং সাথে সাথে সময় লাগে শারীরিক যে দুর্বলতা হয় সেটা কাটাতে যাইহোক শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য খাদ্যের কোন বিকল্প নেই মানে পুষ্টিকর খাদ্যের কোন বিকল্প নেই। তাই সে দুর্বলতা কমানোর জন্য দরকার পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম এবং সুস্বাস্থ্যকর খাবার এবার আমি আপনাদেরকে জানাবো কোন খাবার গুলো খেলে আপনার জ্বর তাড়াতাড়ি সেরে উঠতে সাহায্য করবে জ্বর থাকা অবস্থায় যে বিষয়গুলোর দিকে রোগীর খেয়াল রাখা উচিত সেগুলো হলো ;

  • বিশেষ করে টাইফয়েড জ্বরের মতো ভয়ানক রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর সেই রোগীর প্রোটিন ও আয়রন সমৃদ্ধ খাবার অবশ্যই খাওয়া উচিত। এমন খাবারের মধ্যে কিছু খাবারের নাম হবে বলে দিচ্ছি যেমন ডাল, মাশরু্‌ম, বাদাম, চিয়া সিড এই ধরনের খাবারে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থেকে থাকে। এছাড়াও আপনারা মুভিতে দেখে থাকবেন , জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিদের বেশিরভাগ সময় মাংসের সুপ খাওয়ানো হয়। এটাও অবশ্যই শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটি খাবার।
  • এবার যে খাবারের কথা বলব সেটা হলো জ্বর হলে রোগীর জন্য জাতীয় খাবার অর্থাৎ ফলমূল যেমন মালটা, কমলা, আপেল, পেয়ারা, আমরা, পেঁপে, আর বিশেষ করে ডাবের পানি। এগুলো শরীরের জন্য অনেক উপকারী তো জ্বর হলে এগুলো অবশ্যই খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
  • খাবারের কথা বলছি আর সেখানে শাকসবজি থাকবে না ব্যাপারটা কেমন হলো না পুষ্টিকর খাবারে তালিকায় শাকসবজি অবশ্যই থাকবে ঠিক যেমন প্রথমে বলি ক্ষতির স্বাদ পালং শাক আলু গাজর মিষ্টি কুমড়া বরবটি এগুলো জ্বর হলে অবশ্যই খাবারে তালিকায় থাকা উচিত।
  • তারপর জ্বর হলে সাধারণত প্রচুর পরিমাণে কাশি হয় যার কারণে কলা অনেক ব্যথা এক্ষেত্রে আপনি আদা দিয়ে চা বানিয়ে খেতে পারেন। এটাকে আমরা সাধারণ ভাষায় আদা চা বলে থাকি তো আপনি আধা চা খেতে পারেন যা আপনার শরীর থেকে জীবাণু বের করে শরীরকে টক্সিন মুক্ত হতে সাহায্য করবে।
  • এরপরে যে বিষয়টা সব থেকে জরুরী সেটা হল একজন রোগীর যে বিষয়টার দিকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে সেটা হলো বিশ্রাম। আর বিশেষ করে টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত রোগীর জন্য বিশ্রাম নেওয়াটা খুবই জরুরি তো অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেয়ার চেষ্টা করবেন।

    টাইফয়েডের পর ঝটপট সেরে উঠার জন্য যে খাবারগুলো অবশ্যই খাবেন

    টাইফয়েড রোগে যেসব রোগে আক্রান্ত হয় তাদের অনেকেরই জানার আগ্রহ থাকে টাইফয়েড জ্বর সাধারণত কোন ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়ে থাকে আমিও আগে জানতাম না আপনাদের জন্য বের করলাম টাইফয়েড জ্বর সাধারণত টাইফি আমাকে এক ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়ে থাকে। ব্যাকটেরিয়ার নামটা ভালোই কিউট আছে। কিন্তু এই কিউট ব্যাকটেরিয়া আমাদের শরীরের একদম ১৪ টা বাজিয়ে দেয়।

    এই ব্যাকটেরিয়া টি আমাদের শরীরের রক্তস্বল্পতা সৃষ্টি করে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে একদম নষ্ট করে দেয়। যাই হোক এবার আমি আপনাদের যে বিষয়টা বলব সেটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ টাইফয়েড রোগ থেকে তাড়াতাড়ি সেরে উঠতে হলে যে খাবারগুলো আপনারা অবশ্যই পাবেন সেগুলো হলো ;

    • যেসব রোগী টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত হয় তাদের শরীরে প্রথমেই দেখা যায় পানির অভাব অর্থাৎ পানি স্বল্পতা তাই অবশ্যই শরীরের পানির অভাব পূরণ করার জন্য আপনারা ডাবের পানি খেতে পারেন আমার অবশ্য ডাবের পানি খেতে ভালই লাগে তো আপনারাও খাবেন অনেক উপকারে আসবে।
    • ডাক্তারেরা বলে থাকে টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত রোগীদের সুস্থ হওয়ার জন্য কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খাওয়া অনেক প্রয়োজনীয় হয়তো আপনারা ভাবছেন কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারগুলো আবার কি কি সেগুলো হল সিদ্ধ আলু ভাত সবজি এগুলো খেতে অনেকেরই ভালো লাগেনা কিন্তু শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে বেশি সাহায্য করে তো আপনারা অবশ্যই এই খাবারগুলো খাবার চেষ্টা করবেন।
    • আরেকটা কথা চিকিৎসা শাস্ত্র থেকে জানা গেছে শুকনো আঙ্গুর নাকি টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত রোগীদের শরীরকে পুনরায় তাড়াতাড়ি করে সুস্থ করে তুলতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটাকে নাকি একপ্রকার ইউনানী ঔষধ হিসেবে বিবেচনা করা হয় এই আঙ্গুরকে আপনারা চাইলে মন দিয়ে মাকেও খেতে পারেন। অনেক টেস্টি লাগবে এটা অসুরের জন্য অনেক উপকারী যা আপনার অবশ্যই খাবেন।
    • টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত হলে রোগের শরীরের ওজন আস্তে আস্তে কমতে থাকে এর অন্যতম প্রধান কারণ হলো তার খাবারের রুচি চলে যাওয়া এবং ঘন ঘন বমি হওয়া এমন পরিস্থিতিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালরিযুক্ত খাবার দাবার খাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ঠিক যেমন ; কলা, মিষ্টি, আলু বাটারের মত আরো পুষ্টিকর খাবার যেগুলো শরীরে শক্তি যোগান দিতে সাহায্য করবে।

      টাইফয়েড কত দিনে ভালো হয় ?

      আমার নিজেরই টাইফয়েড রোগ হয়েছিল সেহেতু আমি আপনাদেরকে বলতে পারি যে টাইফয়েড জ্বর সারতে প্রায় ১৭ থেকে ১৮ দিন সময় লাগবেই। অনেকের এর আগেও ছেড়ে যেতে পারে তবে আমি মনে করি যদি বাসাতে পর্যাপ্ত পরিমাণের চিকিৎসা না পাওয়া যায় তাহলে একজন টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত রোগীর জন্য হাসপাতালে তাড়াতাড়ি এডমিট হওয়া অনেক ভালো।

      এতে করে তার শরীরের ঝুঁকি অনেকটাই কমে আসবে। টাইফয়েড রোগ সেরে যাওয়ার নির্ধারিত কোন সময় নেই অনেকের সাতদিন লাগে আবার অনেকে ১৭ দিন সঠিক চিকিৎসার ওপর অনেকেই নির্ভর করে। আমি তো প্রথমে বুঝতেই পারিনি আমার টাইফয়েড রোগ হয়েছে। আগে বুঝতে পারলে হয়তো এত সময় লাগতো না। যাই হোক আমি আশা করি আপনাদের উত্তর আপনারা পেয়ে গেছেন।

      টাইফয়েড জ্বর হলে কি চুল পড়ে যায় ?

      এটা সম্পূর্ন রোগীর খেয়াল খুশির ওপর নির্ভরশীল। তবে চুল ফেলে দিতে হবে এটা বাধ্যতা মূলক নয় কারন আমিও শুনেছি যে টাইফয়েড রোগ হলে নাকি চুল পড়ে যায় এটা যে খুব একটা মিথ্যা কথা তা নয়। কারণ এই রোগের অনেক লক্ষণের মধ্যে একটি হলো এই জ্বর হলে তাপমাত্রা একদম মাথায় উঠে যায় আর কোন সাধারণ তাপমাত্রা না ১০৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা যখন আপনার মাথায় উঠবে তখন বুঝতেই পারছেন যে , আপনার মাথা কতটা তাপের সম্মুখীন হবে।

      আর চুল তো মাথাতেই থাকে নাকি। তো চুল প্রথম আপনাদের অবশ্যই পড়বে কিন্তু পরে গিয়ে আবার ঠিক হয়ে যাবে। কারণ টাইফইয়েড চলাকালীন সময়ে তোমার যে চুলগুলো পড়ে যাচ্ছে ওগুলো অতিরিক্ত তাপমাত্রা ও আপনাদের শরীর খারাপের কারণে। কিন্তু পড়ে গিয়ে যখন আপনি সুস্থ হয়ে যাবেন সেই চুলগুলো আবার পুনরায় গজাবে। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন।

      লেখকের মন্তব্য ;-

      যেহেতু আমি নিজেই টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত হয়েছিলাম তাই আমি জানি এই রোগটি হলে ঠিক কতটা কষ্ট হয় আর কতটা সাফার করতে হয়। আর সেজন্য আমি আপনাদের কাছে এমন কিছু তথ্য তুলে ধরলাম যাতে আপনারা সহজে বুঝতে পারেন যে আপনি আসলে কোন কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন কিনা আর যদি বা আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে যেন আপনারা প্রাথমিক অবস্থাতেই চিকিৎসকের মাঝে পৌঁছে সঠিক চিকিৎসা নিতে পারেন। আপনাদের মধ্যে যদি কারো টাইফয়েড রোগ হয়ে থাকে তাহলে আমার দোয়া থাকবে যেন তারাতাড়াতাড়ি খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়। আজকের মতো এখানে বিদায় নিচ্ছি। দেখা হবে আবার নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।

      সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

      এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

      পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
      এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
      মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

      আকাশ সিটির নীতিমালা দেখে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

      comment url