গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

আসসালামু আলাইকুম সবাইকে কেমন আছো সবাই আশা করি ভাল আছেন এখন আমার আর্টিকেল পড়ছেন তাদের মধ্যে বেশিরভাগই মাংস খেতে অনেক পছন্দ করেন বিশেষ করে গরুর মাংস আমরা সবাই কিছুদিন আগে । কোরবানির ঈদ এর উদযাপন করলাম আর আমরা সবাই জানি কোরবানির ঈদ মানে গরুর মাংস খাসির মাংস এগুলোই যাইহোক আমার এই কথাগুলো বলার একটাই মানে সেটা হল যেহেতু কিছুদিন আগে আমরা কোরবানির ঈদ কাটালাম সেহেতু আমরা সবাই জমিয়ে গরুর মাংস খেয়েছি।


তাই আমি আজকের এই আলোচনায় আপনাদের সাথে শেয়ার করব গরুর মাংস খেলে আমাদের শরীরে কি কি উপকার হতে পারে আবার কি কি ক্ষতি হতে পারে যাতে করে পরবর্তী সময় মাংস খাওয়ার সময় আপনাদের মনে থাকে ঠিক কি পরিমানে মাংস পেলে আপনারা সুস্থ থাকতে পারবেন না তাহলে চলুন আর দেরি না করে শুরু করা যাক ;

গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা

আমরা সবাই জানি পবিত্র ঈদুল আযহায় গরু কিংবা খাসি কোরবানি করা হয়ে থাকে কোরবানির দিন আমরা সারাদিনই ব্যস্ত থাকি কারণ সারাদিন আমাদের গরু কোরবানি করে মাংস কোটাকোটি করতে হয় আর যখন মানসিকতা শেষ হয়ে যায় তখন আমাদের যত আত্মীয়-স্বজন আছে মানুষের যে ভাগ রয়েছে সেগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করার পরে সবার মাঝে সমান ভাবে বিতরণ করে দিতে হয় এরপর দিন শেষে গিয়ে আমরা রাতের বেলা পরিবারের সবাই মিলে একসাথে বসে খাবার খেতে আর খাবার খাওয়া মানেই গরুর মাংস দিয়ে জমিয়ে ভাত কিংবা বিরিয়ানি খাওয়া।

আর খাওয়াটাই স্বাভাবিক কারণ মুসলমানদের জন্য যে দুটি হৃদ রয়েছে সেটি বছরের সবথেকে আনন্দের দুইটা দিন তাই এই দিনে একটু জমিয়ে খাওয়া দাওয়া করলে কি হয় তবে আপনাদের মধ্যেই রয়েছেন যারা জানতে চান যে গরুর মাংস খেলে আমাদের শরীরের কি কি উপকার হয় বা কি কি উপকার হতে পারে ?

চলুন তাহলে আমরা এই ব্যাপারে একটু গবেষণা করি যদিও গবেষণা আমি করেছি এবার শুধু আপনাদেরকে সাজিয়ে বসিয়ে জানানোর পালা তো যেটা আমি সবসময় বলি একটু কষ্ট করে নিচের দিকে দেখুন আর জেনে নিন গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে ;

  • গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা ; আপনাদের মধ্যে অনেকেই জানেন না যে গরুর মাংসের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন জিংক ভিটামিন সেলেনিয়াম আয়রন নায়াসিন এরকমই আরো অনেক ধরনের পুষ্টিকর উপাদান যা আমাদের শরীরের বৃদ্ধিতে ওজন বাড়াতে এবং রক্ত বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

  • গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা ; আপনারা যারা গরুর মাংস খেতে পছন্দ করেন তারা জানলে খুশি হবেন যে গরুর মাংস হলো প্রোটিনের অন্যতম একটি উৎস যা খেলে আমাদের শরীরে যদি খনিজের পরিমাণ কম থাকে সেটা ভরাট হয়ে যায় আর আমাদের শরীরের আগে থেকে আরো শক্তিশালী হয়ে যায়।

  • গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা ; আমি একটু আগেই আপনাদেরকে বলেছি যে গরুর মাংসের মধ্যে জিংক একটি উপাদান রয়েছে যা আমাদের শরীরের ভেতরে থাকা কোষগুলোকে সুরক্ষা সাহায্য করে এবং আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয় যার ফলে আমাদের শরীর থাকে  আরো আরো সুস্থ আরো সবল।

  • গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা ; অনেকে রয়েছেন যারা চান আপনাদের বাসা সুস্থতা বলে শক্তিশালী থাকুক তাহলে তাদের জন্য একটাই কথা বলব গরুর মাংস শক্তিশালী করতে সাহায্য করে তবে হ্যাঁ কোন কিছুই পরিমাণের থেকে বেশি ভালো নয় সে বিষয়ে একটু নজর রাখবেন।

সত্যি কথা তো এটাই যে গরুর মাংস খেতে সবাই খুব পছন্দ করে এমনকি আমি নিজে গরুর মাংস খেতে খুবই পছন্দ হয় ঈদের দিন তো দুই বাটি নিয়ে বসে পরেছিলাম সেদিন শুধুমাত্র আমি মাংসই খেয়ে গেছি অন্য কিছু খাইনি । হাস্যকর ব্যাপার হল পরবর্তীতে আগেয়া সেদিন বিছানা থেকে উঠতে পারিনি পেট খুলে বেলুন হয়ে গেছে গিয়েছিলো।

গরুর মাংস খাওয়ার অপকারিতা

যাইহোক আমি এই কথাটা আপনাদের এই কারণে বললাম সব খাবারের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি অপকারিতাও রয়েছে অর্থাৎ আপনাদের উপকারিতা সঙ্গে সঙ্গে অপকারিতা সম্পর্কেও জেনে নেওয়াটা দরকার তাই আমি এখন আপনাদের সাথে আলোচনা করব গরুর মাংস খেলে আপনাদের শরীরের উপর কি কি খারাপ প্রভাব পড়তে পারে না। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক গরুর মাংস খাওয়া না অপকারিতা সম্পর্কে ;

  • কোষ্ঠকাঠিন্য যাদের রয়েছে তাদের জন্য গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা ; আপনাদের মধ্যে যাদেরই  কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয়েছে তাদের জন্য একটা দুঃসংবাদ হল অতিরিক্ত পরিমাণে আপনারা যদি গরুর মাংস খান তাহলে আপনার এই সমস্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাবে যাতে করে আপনার শরীর পরবর্তীতে গিয়ে আরো খারাপ হয়ে যেতে পারে তাই অবশ্যই আপনারা মাংস খেলেও পরিমান মত খাবেন। এতে করে শরীরের উপর কোন খারাপ প্রভাব পড়বে না আর আপনাদের শরীরও সুস্থ এবং স্বাভাবিক থাকবে আশা করি এই ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছেন।
  • গরুর মাংস খেলে কোলন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে ; যেহেতু আমরা সবাই গরুর মাংস খেতে অনেক পছন্দ করি তাই অনেক সময় আমাদের খেয়াল থাকে না যে আমরা পরিমাণের বাইরে খেয়ে ফেলছি কিন্তু আমাদের এই বিষয়টাতে নজর দিতে হবে কারোর ভেতরে কি পরিমানে ছেলে সেটা মোটেও আমাদের শরীরের পক্ষে ভালো নয়। মাংস অবশ্যই খাবেন তবে সেটা করিনি তো স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন আপনারা যদি সপ্তাহে ৫ বেলা গরু মাংস খান তাহলে কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দিন দিন বেড়ে যায় যার ফলে আপনারা দিন দিন মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে থাকবেন অবশ্যই এটা আপনারা চাইবেন না তাই আপনাদের কাছে আমার আবেদন থাকবে যে মাংস খাওয়ার সময় অবশ্যই সতর্ক থাকবেন অর্থাৎ পরিমাণ মতো খাবেন তাহলেই হবে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।


  • স্ট্রোকের রোগীদের জন্য গরুর মাংস খাওয়ার অপকারিতা ; গরুর মাংসের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ চর্বি ও তেল যারা আমাদের মধ্যে অনেকেই খেতে অনেক পছন্দ করেন কিন্তু আমরা জানি না এই তেল বা চর্বি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের দিন দিন কি বারোটা বাজছে অতিরিক্ত পরিমাণে গরুর মাংসের তেল থাকার কারণে এটা আমাদের শরীরের মধ্যে যাওয়ার পরে আমাদের স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা দিন দিন বাড়িয়ে দেয় কারণ গরুর মাংসের ভিতরে থাকা তেল খাওয়ার ফলে আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয় তাই অবশ্যই গরুর মাংস খেলে তেল বা চর্বি কম খাওয়ার চেষ্টা করবেন আর যাদের আগে থেকেই শ্বাস নিতে অসুবিধা হয় তাদের জন্য আমি বলব আপনারা একদমই এগুলো খাবেন  না বিশেষ করে চর্বি বা তেল। হ্যাঁ মাংস খেতে পারেন কিন্তু পরিমাণমতো।

যাইহোক এগুলো আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করলাম গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা এবার আপনাদেরকে আরো কিছু বিষয়ে সতর্ক করা যাক ;

গরুর মাংস খাওয়ার সতর্কতা

  • গরুর মাংস খাওয়ার সতর্কতা ; অবশ্যই গরুর মাংস খাওয়ার সময় যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন সেটা হলো গরুর মাংস খাওয়ার পর সাথে সাথে কোমল পানীয় জাতীয় কিছু খাবেন না একটু অপেক্ষা করুন এবং কিছুক্ষণ পরে খান কারণ খাওয়ার পর কোমল পানীয় খাওয়ার পরে গরুর মাংসের মধ্যে যে ফসফরাস এবং সোডিয়াম থাকে সেগুলোর প্রভাবে আপনার শরীরে রক্তটা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে আশা করি ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছেন। তাই একটু ধৈর্য ধরে কিছুক্ষণ পরে কোমল পানি ও জাতীয় কিছু খাবেন।

  • গরুর মাংস খাওয়ার সতর্কতা ; বিশেষ করে যাদের ওজন বেশি অর্থাৎ যারা একটু মোটা তাদের জন্য গরুর মাংস বেশি পরিমাণে খাওয়া একদমই ঠিক নয় এতে করে তাদের শ্বাস-প্রশ্বাস হঠাৎ নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা হতে পারে আর হ্যাঁ একটা বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন আপনাদের মধ্যে যাদের অজন ওজন বেশি অর্থাৎ মোটা বেশি তারা গরুর মাংসের চর্বি বা তেল অবশ্যই খাবেন না।

  • গরুর মাংস খাওয়ার সতর্কতা ; আমি আপনাদেরকে একটু আগেও বলেছি গরুর মাংসের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে আর সেটাকে বজায় রাখতে হলে অবশ্যই গরুর মাংস খাওয়ার পর  পর চার বা কফি জাতীয় কিছু খাওয়া যাবে না এতে করে আয়রন শোষন ব্যাহত হবে আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

  • গরুর মাংস খাওয়ার সতর্কতা ; গরুর মাংস খাওয়ার পর অনেকেরই শ্বাস নিতে অসুবিধা হয় এই অসুবিধা থেকে বাঁচতে হলে আপনারা চাইলে গরুর মাংস খাওয়ার সাথে সাথে সালাত অর্থাৎ টমেটো দিয়ে সালাত বানিয়ে খেতে পারেন এটা আপনাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। এতে করে আপনাদের শরীরও ভালো থাকবে আর মাংস খেতে পারবেন মজা তাই না।

  • গরুর মাংস খাওয়ার সতর্কতা ; এই সতর্কবার্তাটি শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য বিশেষ করে যেসব মহিলা অন্তঃসত্তা তারা অবশ্যই মাংস কম পাবেন অর্থাৎ কম সেদ্ধ ধ্বংস হওয়া থেকে বিরত থাকবেন। কারণ কম সেদ্ধ মাংস খাওয়ার ফলে শরীরে টক্সোপ্লাজমার ঝুঁকি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাই অবশ্যই অন্তঃসত্ত্বা মহিলারা মাংস কম খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

গরুর মাংস খেলে কি ওজন বাড়ে ?

আপনাদের মধ্যে অনেকেই প্রশ্ন থাকে যে গরুর মাংস খাওয়ার ফলে কি ওজন বাড়ে আমি বলব অবশ্যই বাড়ে কারণ গরুর মাংসের মধ্যে থাকা প্রচুর পরিমানে বদলি এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট আমাদের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে আর আপনি যদি প্রতিদিন গরুর মাংস খেয়েই জান আর কোন রকমের শরীর চর্চা না করে্ন তাহলে আপনার শরীর অসুস্থ হবে কিন্তু মোটা আপনি হবেন একদম সিওর।

তাই যদি বিনা কষ্টে মোটা হতে চান তাহলে গরুর মাংস খান তবে অবশ্যই শরীরচর্চা করবেন কারণ গরুর মাংসের মধ্যে থাকা প্রচুর পরিমানে চর্বি আপনার চর্বি বাড়িয়ে দিবে আর এতে করে আমরা শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে আরও অসুবিধা বেড়ে যাবে দিনশেষে আপনাদের প্রশ্নের উত্তর হল গরুর মাংস খেলে ওজন বাড়ানো সম্ভব।

দিনে কতটুকু গরুর মাংস খাওয়া উচিত ?

অনেকের মনে এটাও প্রশ্ন থাকে যে দিনের মধ্যে কতটুকু মাংস খেলে শরীর ভালো থাকে তো আপনাদের উত্তর হল যে শরীর সুস্থ রাখার জন্যএকদিনে ৭০ গ্রামের বেশি মাংস খাওয়া উচিত নয় এতে করে আপনার শরীরের চর্বি এবং রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

মাংস খেলে কি পেটের মেদ বাড়ে ?

এটা খুবই ইন্টারেস্টিং একটা প্রশ্ন যে মাংস খেলে কি পেটের মেদ বাড়ে আপনাদেরকে কি মনে হয় মাংস খেলে পেটের মেদ কমবে একদমই না আমরা যদি যেকোনো খাবার প্রতিদিন একটু পরিমাণে থেকে বেশি খাই আর কোন রকমের শরীর চর্চা না করি তাহলে এমনিতেই মোটা হয়ে যাবো সেই জায়গাতে গরুর মাংসের মধ্যে আগে থেকেই প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে।

যার কারণে আমাদের শরীরের ওজন এমনিতেই বেড়ে যাবে। আশা করি আপনারা আপনাদের উত্তর পেয়ে গেছেন। যাই হোক ভাই অনেক বকবক করলাম আসলে আমি নিজেও পরের মাংস খেতে অনেক পছন্দ করি তাই জন্য ভাবলাম আপনাদের সবাইকে জানিয়ে দি কি পরিমাণে গরুর মাংস খাওয়া উচিত আশা করি আমার দেওয়া তথ্য গুলো আপনাদের অবশ্যই উপকারে আসবে।

লেখকের মন্তব্য 

আশা করি আপনাদের সবার ঈদ এবার অনেক ভালো কেটেছে দোয়া করি সবার পরের বার থেকে আরও বেশি ভালো কাটুক পবিত্র ঈদুল আযহার আনন্দময় দিন থেকে আপনারা আরো সুন্দর করে উপভোগ করুন আরো বেশি বেশি করে মাংস খান তবে যে বিষয়গুলো বললাম এগুলো খেয়াল রাখবেন কারণ একটা কথা সবসময় মনে রাখবেন আপনি সুস্থ থাকলে আপনার পরিবার সুস্থ থাকবে। যাই হোক  আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি।

সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আকাশ সিটির নীতিমালা দেখে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url