মেথি উপকারিতা এবং অপকারিতা
আসসালামুয়ালাইকুম সবাই কেমন আছেন আশা করি ভাল আছেন আজকে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো মেথি নামকএকটি উপাদানের উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে। আপনারা জানলে অবাক হবেন যে আজকে যে উপাদানটি নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি সেটা একই সাথে মসলা এবং খাবার উপাদান হিসেবে কাজ করে থাকে। আপনারা হয়তো জানেন না যে মেথির আরেক নাম খুলবা। নামটা হাস্যকর হলেও এটাই সত্যি।
যাই হোক অনেক বকবক করলাম বেশি আজাইরা প্যাচাল না করে চলুন আজকের আলোচনা শুরু করা যাক অর্থাৎ আপনাদেরকে জানিয়ে দেয়া যাক মেথি নামক উপাদানটির সকল উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে ;
মূলত মেথি হচ্ছে একটি মৌসুমী গাছের নাম তাই মেথি গাছের পাতা আমরা সাধারণত শাক হিসেবে খেয়ে থাকি। আর মেথির বীজ হচ্ছে এক ধরনের মসলা যা সাধারণত রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তো এই বীজগুলোকে মুখে নিলে এটার স্বাদ সাধারণত হালকা তিতা তিতা লাগে আর এই স্বাদ হেঁটে তিতা হলেও ছোট্ট এই দানার মধ্যে অসংখ্য উপকারি উপাদান রয়েছে। যা জন্য অত্যন্ত উপকারী। বিভিন্ন গবেষণা থেকে দেখা গেছে মেথির মধ্যে রয়েছে অসংখ্য পুষ্টিকর উপাদান তবে আজকে জানবো মেথির সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ গুনাবলীগুলো। চলুন তাহলে আপনাদেরকে একটু বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়া যাক ;
মেথি খাওয়ার উপকারিতা
- ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মেথির উপকারিতা ; আপনাদের মধ্যে এমন অনেকেই রয়েছেন যাদের ডায়াবেটিস রোগ রয়েছেন আপনারা জানলে খুশি হবেন যে মেথি ডায়বেটিস রোগীদের রোগ নিরাময় করতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে আমাদের শরীরের মধ্যে যে সুগার রয়েছে সেটা নিয়ন্ত্রনে থাকে যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এবং মেথির ভেতরে থাকা অ্যামাইনো এসিড আমাদের শরীরের কর্মদক্ষ থাকে কর্মদক্ষতাকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে মেথির উপকারিতা ; বিশেষ করে যাদের সুগারের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য মেথি খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা অবশ্যই অনস্বীকার্য। অর্থাৎ সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে মেথি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আমি একটু আগেই আপনাদেরকে বলেছি যে মেথির ভেতরে থাকা অ্যামাইনো এসিড সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে মেথির উপকারিতা ; আপনাদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছেন যাদের দেখা যাচ্ছে যে ওজন বেড়ে যাচ্ছে একটা স্বাভাবিক ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছেন নিজেকে একটু সুন্দর দেখাতে চাচ্ছেন তাহলে অবশ্যই আপনাদের জন্য মেথি সেবন করা প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ শরীরের সাধারণত মেদ বেড়ে গিয়েছে চর্বি বেড়ে গিয়েছে বা কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে গেছে তারা যদি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে চান তাহলে আপনারা নিয়মিত মেথি খেতে পারেন। কারণ মেথি কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।
- গ্যাসট্রিক জাতীয় সমস্যার সমাধানে মেথির উপকারিতা ; আপনাদের মধ্যে যাদের গ্যাসের সমস্যা রয়েছে অর্থাৎ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে তারা জানলে খুশি হবেন যে মেথি সেবনের ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অনেকটাই কমে যায়। কারণ শরীরের মধ্যে থাকা এসিডিটিকে পায়খানা প্রস্রাবের মধ্য দিয়ে বের করে দিতে সাহায্য করে যার ফলে গ্যাস্ট্রিক নিয়ন্ত্রণে থাকে। অনেক চিকিৎসকেরা বলে থাকেন যে শুধুমাত্র মেথি খাওয়ার ফলে অনেক রোগীরা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পেয়েছে আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন।
- শারীরিক শক্তি বৃদ্ধিতে মেথির উপকারিতা ; এমন অনেক পুরুষ মানুষ রয়েছেন যাদের সেক্স হরমোন সময়ের সাথে সাথে দুর্বল হয়ে যায়। আপনারা জানলে খুশি হবেন যে নিয়মিত মেথি খাওয়ার ফলে পুরুষদের বীজদের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায় এবং পুনরায় আগের শক্তি ফিরে আসে। আশা করি এই বিষয়টা আপনাদের বেশি বাড়িয়ে বলার দরকার নেই আপনারা বুঝতে পেরেছেন। এক কথা মেথি পুরুষদের যৌন ক্ষমতা কে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- মেয়েদের শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে মেথির উপকারিতা ; সাধারণত মেয়েদের যখন পিরিয়ড হয় তখন তাদের অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যথা শুরু হয়ে যায় আর এই ব্যথার পরিমাণ অনেকটাই কমিয়ে দিতে সাহায্য করে মেথি। তাই অবশ্যই পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে মেথি সেবন করতে ভুলবেন না এটা আপনার ব্যথাকে যন্ত্রণাকে অনেকটাই কমিয়ে দিতে সাহায্য করবে।
- হজম শক্তি বাড়াতে মেথির উপকারিতা ; আপনাদের মধ্যে অনেকেরই দেখা যায় যে খাওয়ার পর খাবার হজম করতে অনেকটাই কষ্ট সহ্য করতে হয়। আপনারা জানলে খুশি হবেন যে মেথি সেবনের ফলে আমাদের শরীরের হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় যার ফলে কোন খাবার খাওয়ার পরেও আমাদের হজমে কষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
যাইহোক মেথির উপকারিতা সম্পর্কে আমরা এতক্ষণ অনেক কিছু জানতে পারলাম এবার আমরা জানবো মেথি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে যেটা জেনে নেওয়া সবথেকে বেশি জরুরী তাহলে চলুন আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক ;
মেথি খাওয়ার নিয়ম
- মেথি খাওয়ার নিয়ম ; মেথি খাওয়ার বেশ কয়েকটি নিয়ম রয়েছে। তবে সাধারণত যে কোন সমস্যায় আপনার ১০ থেকে ১২ টি মেথি দানা সকালে খালি পেটে এমনিতেই চিবিয়ে খেতে পারেন। অথবা আপনারা মেথি দানাগুলোকে ভালো করে রোদে শুকিয়ে সেগুলোকে ব্লেন্ডারের সাহায্যে পাউডার করে সেখান এক থেকে দুই চামচ পরিমাণে নিয়ে রেগুলার পানিতে মিশিয়ে আপনারা খেতে পারেন। এভাবে খেলেও আপনাদের শরীরের অনেক উপকার হবে।
- মেথি খাওয়ার নিয়ম ; মেথি খাওয়ার আরেকটি জনপ্রিয় নিয়মের মধ্যে একটি হচ্ছে মেসি গুলোতে পানিতে ভিজিয়ে রেখে তারপরে সেগুলোকে খাওয়া। অর্থাৎ এক থেকে দুই চামচ পরিমাণ মেথি এক গ্লাস পানিতে সারারাত ভিজিয়ে রেখে সেটাকে সকালে খালি পেটে খেতে হবে। এভাবে আপনি নিয়মিত খেতে পারেন।
মেথি খাওয়ার অপকারিতা
- মেথি খাওয়ার অপকারিতা ; মনে রাখবেন মেথি একটানা দুই থেকে বেশি খাওয়া যাবে না। কারণ কোন কিছুই পরিমাণের থেকে বেশি ভালো নয়। যে কোন ভালো জিনিস যদি আপনি পরিমাণের থেকে অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার করেন তাহলে সেটা আপনার জন্য ভালোর থেকে খারাপ বেশি হয়ে যাবে। তাই যদি আপনারা খেতে চান তাহলে দু তিন মাস খাওয়ার পরে আবার এক থেকে দু মাস মাঝখানে বিরতি রাখুন এবং পরবর্তীতে আবার খান। এতে করে আপনার শরীরের ওপর কোন প্রকার খারাপ প্রভাব পড়বে না। আশা করি আপনারা আবার কথা বুঝতে পেরেছেন।
- মেথি খাওয়ার অপকারিতা ; গর্ভবতী করেছেন তারা অবশ্যই পরিমাণের থেকে বেশি মেথি সেবন করবেন না এতে করে আপনার শরীরের উপর তারা প্রভাব পড়তে পারে। দু-তিন মাস খাওয়ার পরে আপনি মেথি খাওয়ার থেকে বিরত থাকুন এতে করে শরীরের উপর খারাপ প্রভাব পড়বে না।
যাইহোক অনেক বকবক করলাম আপনাদের সাথে। পৃথিবীতে এমন অনেক কিছু রয়েছে যেগুলোর যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি রয়েছে অপকারিতা। সেটা যতই ভালো জিনিস হোক না কেন। আমি আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করলাম মেথি খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং কিভাবে খাবেন সেগুলো।
আমার আলোচনার মধ্যে যদি কোন ভুল থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই ক্ষমার নজরে দেখবেন। যাই হোক আমি যেগুলো বলেছি আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছন। শরীরের জন্য যেটা যত উপকারই হোক না কেন সেটা খাবার অবশ্যই একটা নিয়মাবলী রয়েছে যেগুলো জেনেই খাবেন আমি আপনাদেরকে সেই নিয়মাবলী গুলো বলে দিলাম। আশা করি আপনারা সেগুলো অনুসরণ করেই মেথি খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
আমার আলোচনার মধ্যে যদি কোন ভুল থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই ক্ষমার নজরে দেখবেন। যাই হোক আমি যেগুলো বলেছি আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছন। শরীরের জন্য যেটা যত উপকারই হোক না কেন সেটা খাবার অবশ্যই একটা নিয়মাবলী রয়েছে যেগুলো জেনেই খাবেন আমি আপনাদেরকে সেই নিয়মাবলী গুলো বলে দিলাম। আশা করি আপনারা সেগুলো অনুসরণ করেই মেথি খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
লেখকের মন্তব্য
পৃথিবীতে সবাই চায় নিজেকে সুস্থ রাখতে আমি চাই আপনি চান এবং বাকিরাও তাই চায় আর সুস্থ থাকতে হলে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে। তার মধ্যে একটি পুষ্টিকর উপাদান হচ্ছে মেথি। যেটা খাওয়ার উপকারিতা এবং কিভাবে খেতে হবে এই সবগুলোই আপনাদেরকে বলে দেয়া হয়েছে আশা করি আপনারা সবাই বুঝতে পেরেছেন। আর কথা না বাড়িয়ে আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করছি।
সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
আকাশ সিটির নীতিমালা দেখে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url